Header Ads

পরিবেশ ও পরিচিতি

কোন একটি জীবের অস্তিত্ব বা বিকাশের উপর ক্রিয়াশীল সামগ্রিক পারিপার্শ্বিকতা, যেমন চারপাশের ভৌত অবস্থা, জলবায়ু ও প্রভাববিস্তারকারী অন্যান্য জীব ও জৈব উপাদান। বিশ্ব পরিবেশের দ্রুত অবনতি হচ্ছে, বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে এ অবনতি হয়েছে আরও দ্রুত। বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন পাশ হয়েছে। কিন্তু জনবিস্ফোরণ, বনাঞ্চলের অবক্ষয় ও ঘাটতি এবং শিল্প ও পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাবের দরুন দেশের পরিবেশ এক জটিল অবস্থার দিকে পৌঁছতে যাচ্ছে।

পলিসঞ্চয় পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থাপরিবেশ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনাগ্রীনহাউজ প্রতিক্রিয়া ও বিশ্বউক্তায়নপরিবেশ শিক্ষা নিম্যাপপরিবেশনীতি পরিবেশগত অবস্থাপরিবেশ দূষণ পরিবেশের অবক্ষয়প্লাবন ও বন্যা পরিবেশের উদ্বেগজনক স্থাননদীভাঙন।



পরিবেশগত অবস্থা ব্যতিক্রমধর্মী ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। প্রায় ১৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকার পানি নেমে আসে পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদী দিয়ে। এই পানির মাত্র শতকরা ৮ ভাগ নিষ্কাশন এলাকা বাংলাদেশের অন্তর্গত। অধিকাংশ নিষ্কাশন অববাহিকা প্রতিবেশী দেশসমূহে অবস্থিত। বিশাল প্রবাহসহ নদ-নদীসমূহের গতি বাংলাদেশ ব-দ্বীপে হ্রাস পাওয়ার ফলে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে একটি অত্যন্ত পুরু পাললিক স্তর গঠন করে বাংলাদেশ গড়ে উঠে। নিম্নোক্ত বিষয়গুলি পরিবেশগত দিক থেকে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ করেছে: ১. অসংখ্য নদী, তাদের শাখা-প্রশাখা দ্বারা জালের ন্যায় বিস্তৃত বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপগুলির একটি; ২. অত্যন্ত পুরু পলিস্তর (বিশ্বে সবচেয়ে পুরু) দ্বারা গঠিত দেশটির সাধারণ ভূপৃষ্ঠ অত্যন্ত নিম্ন-উচ্চতাবিশিষ্ট; ৩. বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন ও দীর্ঘতম বালুময় সৈকত; ৪. বিশ্বের সর্বাধিক ঘনবসতি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অত্যধিক চাপ; ৫. আর্দ্র ও শুষ্ক মৌসুমে (বন্যা ও খরা) ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানির প্রাপ্যতার পরিমাণের মধ্যে ব্যাপক তারতম্য; এবং ৬. বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পানির প্রবাহের ব্যাপকতা।
বাংলাদেশের উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ দেশটিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত সমস্যাপ্রবণ করে তুলেছে। এদেশের ভূমি বহুলাংশে নিম্ন-প্লাবনভূমি। ভূমির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য, ভৌগোলিক অবস্থান, অসংখ্য নদ-নদী ও মৌসুমি জলবায়ু বাংলাদেশকে বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য অত্যন্ত আশঙ্কাপূর্ণ করে তুলেছে। বন্যা ও খরার চরমমাত্রা বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য। এসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেশের টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অর্জনে বিরাট বাধা হিসেবে কাজ করে।
বাহ্যিক পরিবেশ জলবায়ু-  বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য ঋতুবৈচিত্র্যসহ উষ্ণমন্ডলীয় মৌসুমি জলবায়ু বিরাজমান। বর্ষা মৌসুমে (জুলাই-অক্টোবর) প্রচুর বৃষ্টিপাতের পর আসে শীতকাল (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি), তারপর গরম (মার্চ-জুন)। গ্রীষ্মকালে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪° সে এবং সর্বনিম্ন ২১° সে। শীতকালে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯° সে এবং সর্বনিম্ন ১১° সে।
এ অঞ্চলের বৃষ্টিপাতে সময় ও স্থানগত ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের ৭০% থেকে ৮০% হয় মৌসুমি ঋতুতে। গ্রীষ্মের পর ভারত মহাসাগর থেকে মৌসুমি উষ্ণ আর্দ্র বায়ু বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং বিশ্বের কিছু এলাকায় সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত ঘটায়। এসব বৃষ্টিপাত প্রধানত সংঘটিত হয় উঁচু উজান অঞ্চলে, বিশেষ করে ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্যে এবং বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। 




No comments

Theme images by luoman. Powered by Blogger.